১৮ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , বুধবার, ৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি।
১৮ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , বুধবার, ৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই

চীনে নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের প্রায় দুই হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অল্প কয়েকজন ছাড়া অন্যরা চীনের। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে। তাঁরা সবাই চীনের নাগরিক। এ পরিস্থিতিকে গুরুতর বলে উল্লেখ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।

আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং নতুন চান্দ্রবর্ষ উপলক্ষে ছুটির দিনে এক বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করে বলেছেন, ভয়াবহ নতুন ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, দেশ ‘গুরুতর পরিস্থিতির’ মুখোমুখি।

উহানে সামরিক বাহিনীর বিশেষায়িত চিকিৎসা দল পৌঁছেছে। ভাইরাসটি প্রথমে দেখা দেয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। ভাইরাসটিকে ঘিরে চীন এবং বিভিন্ন দেশে উদ্বেগ বাড়ছে।

চীনে গতকাল শনিবার নতুন চান্দ্রবর্ষ শুরু হয়েছে। এটি চীনের অন্যতম প্রধান উৎসব হলেও নতুন করোনাভাইরাসের কারণে নববর্ষের অনেক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। চীনে ভ্রমনরত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা জ্বরে আক্রান্ত তাঁদের পরীক্ষা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি শহরের ট্রেন স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

হংকংয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং স্কুলগুলোর ছুটি বাড়ানো হয়েছে। আর যেসব দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাঁদের পৃথক রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে।

ভাইরাসে ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। প্রথমে জ্বর ও শুকনো কাশি দিয়ে শুরু হয়। এক সপ্তাহ পর তা ঘন ঘন নিশ্বাস নেওয়ায় রূপান্তরিত হয়। পরে শ্বাসকষ্ট হয়। অনেক ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কারও কারও অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়ে। এর সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা বা টিকা বা ওষুধ নেই। এ ধরনের ভাইরাস আগে কখনো দেখা যায়নি। তাই এটার নামকরণ করা হয়েছে ‘২০১৯-এনকভ’ বা ‘নভেল করোনাভাইরাস’। সামুদ্রিক প্রাণী থেকে এটি মানুষে ছড়িয়েছে। এরপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে।

ভাইরাসটির সঙ্গে সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্স ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে। ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ভাইরাসটি প্রথমে বাদুড় থেকে শুরু হয় এবং পরে বিড়ালে স্থানান্তরিত হয়। এরপর তা মানুষের মধ্যে ছড়ায়। সার্স ভাইরাসে চীনে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল।

যুক্তরাজ্যের ল্যানকাসটার ইউনিভার্সিটি আক্রান্ত মানুষের সংখ্যার ভিত্তিতে একটি আনুমানিক তথ্য প্রকাশ করেছে। এ বছর এই নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১১ হাজার হতে পারে। যদি তা-ই হয়, তবে তা সার্স-আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে।

অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রথমটি শনাক্ত হয় মেলবোর্নে, এর পরও সিডনিতে আরও তিন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া এটা ইউরোপেও ছড়িয়েছে। ফ্রান্সে তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে দুজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে ৩১ জনকে এই ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে পরীক্ষা করা হয়, তবে পরীক্ষায় ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে সম্প্রতি আসা দুই হাজার ব্যক্তিকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাজ্য। চীনের ভাইরাসটি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের ঝুঁকিতে রয়েছে প্রতিবেশী এশিয়ার দেশগুলো। ইতিমধ্যে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জাপান, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া ও নেপালে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। (প্রথমআলো)

 

সংবাদটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on print
Print
Share on email
Email
Share on whatsapp
WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই। আপনি প্রথম মন্তব্যটি করুন। on করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই

আপনি কি ভাবছেন ? আপনার মতামত লিখুুন।

এই বিভগের আরো সংবাদ

সর্বশেষ