২০ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , সোমবার, ৬ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ রজব, ১৪৪৬ হিজরি।
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , সোমবার, ৬ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ রজব, ১৪৪৬ হিজরি।

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বার্মিংহামবাসীর ঐতিহাসিক ভূমিকার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় এবং ইতিহাস বিকৃতি বিষয়ে’ ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ এর সংবাদ সম্মেলন

ইতিহাস বিকৃতির কবল থেকে বার্মিংহামের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মসুদ আহমেদ

‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বার্মিংহামবাসীর ঐতিহাসিক ভূমিকার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় এবং ইতিহাস বিকৃতি বিষয়ে’ ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা- মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সংগঠক এবং ২৮ মার্চ ১৯৭১ সালে বার্মিংহামে প্রথম পতাকা উত্তোলনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দ্রুত প্রদানের দাবি জানিয়ে অনাহুত এ বিলম্বের জন্য ক্রমশ ইতিহাস বিকৃতি ঘটছে উল্লেখ করে তারা প্রশ্ন তুলেছেন ইতিহাস বিকৃতির এ দায় কে নেবে।

গত ৪ মার্চ ২০২৪, সোমবার, স্থানীয় এক রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ সভাপতি বশির মিয়া কাদির। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মসুদ আহমেদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাংবাদিক কাজী জাওয়াদ, সৈয়দ লুৎফুর রহমান, সয়ফুল আলম, এনামুল হক খান নেপা, এরশাদ আলী, জুনেদুর রহমান জুনেদ, তাজুল ইসলাম, রহমত আলী প্রমুখ।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদকে অকার্যকর সংগঠন বলা এবং সংগঠক না হয়েও সংগঠক দাবির মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় বলে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে ২০১০ সালে ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ গঠনের প্রসঙ্গে ‘স্বাধীনতর ৪০ বছর পর এই সংগঠন যুক্তরাজ্যে বিশেষ করে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বার্মিংহামবাসীর অবদানগুলো তুলে ধরার প্রয়াসের সূচনা’ বলে উল্লেখ করেন। তারা আরো বলেন ‘বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বার্মিংহামের প্রবাসীদের ভূমিকা বিস্মৃতির অতল গহ্বর থেকে রক্ষার মহৎ উদ্দেশ্যে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই দীর্ঘ ১৪ বছরে প্রতি বছর ২৮ মার্চ যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করেছে এই সংগঠন।’

সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে তারা বলেন- ‘২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ নিয়ে সম্প্রতি কিছু অপপ্রচার ও ইতিহাস বিকৃতির স্বার্থান্বেষী অপপ্রয়াস এবং ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে এই সংগঠনকে অকার্যকর হিসেবে উল্লেখ করার মত অযাচিত-অনাকাংখিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি।’

অকার্যকর সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন- ’আমরা হীনস্বার্থ-ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে কাউকে ছোট কিংবা কাউকে বড় করে ইতিহাস বিকৃতির অংশ হতে চাই না। তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই আমরা আমাদের মূল দায়িত্ব তথা ২৮ মার্চ এবং প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে মূল স্রোতে ভূমিকা পালনকারীদের স্বিকৃতি আদায়ে অত্যন্ত সচেতন ও বলিষ্ঠভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি।’

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মতৎপরতার কথা সবিস্তারে তুলে ধরে তারা বলেন- ‘প্রবাসে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি আদায়ে ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ অত্যন্ত সক্রিয়। এ সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই খুবই সচেতন ও পরিকল্পিতভাবে মু্ক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করে আসছে। আমরা আত্মপ্রচার বা কোন ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে কোন উদ্যোগ বা তৎপরতা চালাই না।’

নতুন করে সংগঠকের দাবি প্রসঙ্গে তারা বলেন- ‘২৮ মার্চ ১৯৭১ সালের সমাবেশে যোগ দেয়া এবং সমাবেশ আয়োজন, মু্ক্তিযুদ্ধের সপক্ষে পুরো ৯ মাসব্যাপী নানা কর্মসূচী প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মুল স্রোতে ভূমিকা রাখা ভিন্ন বিষয়। সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় সংগঠক দাবিদার অনেকেরই সেই সময় মুল স্রোতে জড়িত থাকার কোন প্রমাণ যেমন নেই তেমনি একটি পাউন্ডও দান করেছেন এমন রেকর্ডও নেই।

উল্লেখ্য ২০১১ সালের চ্যানেল আইয়ের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সেই সময়কার বেঁচে থাকা প্রায় সকল সংগঠক এবং মরণোত্তরও অনেককে মূল্যায়ন করা হয়েছে। তখন আজকের সংগঠক দাবিদার এ ব্যাপারে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেন নি এমনকি বেঁচে থাকা কোন কোন সংগঠক তাঁর ব্যাপারে নেতিবাচক উত্তরই প্রদান করেছেন।’

স্বীকৃতি আদায় নিয়ে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন- ‘বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রধান। তাই আমরা পূর্ণ বিশ্বাসী প্রবাসী মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি এ সরকারের সময়েই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তাই আমরা বিষয়টি বর্তমান সরকারের নজরে নিয়ে আসতে নানামাত্রিক উদ্যোগ-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি অব্যাহতভাবে।’

প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি আদায়ের মূল উদ্দেশ্য সাধন করতে অতীতের মত সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তারা বলেন- ‘ইতিহাস বিকৃতির কবল থেকে বার্মিংহামের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি। ‘অন্যথায় মূল দাবি আদায় ব্যাহত হবে বলে তারা সংশয় প্রকাশ করেন।

সংগঠকের দাবিদার এবং অকার্যকর সংগঠন কে বলেছে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলার জন্য উপস্থিত সংবাদ কর্মীদের পীড়াপীড়িতে তারা বলেন- এটা কমিউনিটি ইস্যু এবং ভদ্রতার খাতিরে কারো নাম এখানে নিচ্ছি না।’

সংগঠনের সভাপতি ড. তজাম্মেল টনি হক শারিরীকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে উপস্থিত থাকতে না পেরে সহ সভাপতির মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনের সফলতা কামনা করেন এবং উপস্থিত সংবাদকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বার্মিংহামে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পঠিত পুরো বক্তব্য:

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বার্মিংহামবাসীর ঐতিহাসিক ভূমিকার রাষ্ট্রীয় স্বিকৃতি আদায় এবং ইতিহাস বিকৃতি বিষয়ে ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন

তারিখ: ৪ মার্চ ২০২৪, সোমবার, স্থান: পঞ্চখানা রেস্‌টুরেন্ট, বার্মিংহাম

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ

শত ব্যস্ততার মঝেও আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ, বার্মিংহাম, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে প্রথমেই আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

মানব, রাষ্ট্র ও সমাজের বিকাশে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। আমাদের জাতীয় সকল গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে সাংবাদিকগণ রেখেছেন তাৎপর্যপূর্ণ অবদান। ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ গঠনের পর থেকেও যুক্তরাজ্যে মিডিয়ার কাছ থেকে অভূতপূর্ব সহযোগিতা পেয়ে এসেছে। এজন্য আমরা আবারো আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা

২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বার্মিংহামের প্রবাসীদের ভূমিকা বিস্মৃতির অতল গহ্বর থেকে রক্ষার মহৎ উদ্দেশ্যে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই দীর্ঘ ১৪ বছরে প্রতি বছর ২৮ মার্চ যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করেছে এই সংগঠন। স্বাধীনতর ৪০ বছর পর এই সংগঠন যুক্তরাজ্যে বিশেষ করে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বার্মিংহামবাসীর অবদানগুলো তুলে ধরার প্রয়াসের সূচনায় ২০১১ সালে বৃহৎ পরিসরে চ্যানেল আই এ দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নেয়। সংগঠন হিসেবে আমরা সে বছর তাদের কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করি। সেই অনুষ্ঠানে রেসকোর্স ময়দানে ১৯৭১ সালে প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী আসম রব প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে প্রায় ৪০ জন প্রবাসী সংগঠককে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এরপর ২০১২ সালে ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকেও ব্যাপকভাবে এ দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ বছরের উদ্যোগে চ্যানেল আই মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আমাদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,

২০১০ সালে অনাড়ম্বরভাবে আমরা প্রথমবারের মত ৪০ বছর পর বার্মিংহামে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত শপথ সমাবেশ এবং বহির্বিশ্বের প্রথম পতাকা উত্তোলনের ঐতিহাসিক মুহূর্তটি স্মরণ করি। সেই অনাড়ম্বর জমায়েতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে ভূমিকা রাখা কিছু সংগঠক এবং সমাবেশে অংশ নেয়া কজন ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ ৪০ বছর পর ২৮ মার্চকে স্মরণ এবং ২৮ মার্চ ২০১০ এর জমায়েত এর খবরটি সর্বপ্রথম চ্যানেল এস-এ প্রচারিত হয়। পরবর্তিতে সেই সংবাদ বার্মিংহাম থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র বাংলা ভয়েস ও বাংলা কাগজ-এ প্রকাশিত হয়। আমরা আজকের এ সংবাদ সম্মেলনের সুযোগে চ্যানেল এস এর তৎকালীন প্রতিনিধি এবং বাংলা সংবাদপত্রদ্বয়ের সংশ্লিষ্টদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বিশ্বজনমত গঠনে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের ছিল অনন্য ভূমিকা। মুক্তিসংগ্রামের প্রতিটি বাঁকেই যুক্তরাজ্য প্রবাসীগণ মিছিল-সমাবেশ, র‌্যালি এবং অর্থ সংগ্রহ ইত্যাদির মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের দেশপ্রেমের পরম উদহারণ স্থাপন করেছেন।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই বার্মিংহামে তাৎক্ষণিক বৈঠক করে ২৮ মার্চ ১৯৭১ সালে ঐতিহাসিক স্মলহীথ পার্কে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ঐ সমাবেশের সংবাদ তৎকালীন মূলধারার মিডিয়াগুলো গুরুত্বের সাথে প্রচার করে।

সাংবাদিকরা সমাজের একটি সচেতন অংশ সুতরাং আমরা মনে করি ২৮ মার্চ এর গুরুত্ব নিয়ে এখানে বেশি কিছু উল্লেখ করা সময়ক্ষেপণ ছাড়া কিছু নয়। আমরা শুধু মাত্র ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ নিয়ে সম্প্রতি কিছু অপপ্রচার ও ইতিহাস বিকৃতির স্বার্থান্বেষী অপপ্রয়াস এবং ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে এই সংগঠনকে অকার্যকর হিসেবে উল্লেখ করার মত অযাচিত-অনাকাংখিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি।

 

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা

প্রবাসে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের রাষ্ট্রিয় স্বিকৃতি আদায়ে ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ অত্যন্ত সক্রিয়। এ সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই খুবই সচেতন ও পরিকল্পিতভাবে মু্ক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের স্বিকৃতি আদায়ে কাজ করে আসছে। আমরা আত্মপ্রচার বা কোন ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে কোন উদ্যোগ বা তৎপরতা চালাই না।

২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ গঠনের সময় বর্তমানে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তারা অনেকেই এই পরিষদ গঠনের-প্রতিষ্ঠাতাদের ধারেকাছে ছিলেন না। এমনকি ১৯৭১ সালে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা না থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে স্বঘোষিত সংগঠক হিসেবে স্বিকৃতি আদায়ে তৎপর কেউ কেউ। এই ইতিহাস বিকৃতির দায় কে নেবে।

মনে রাখতে হবে ২৮ মার্চ ১৯৭১ সালের সমাবেশে যোগ দেয়া এবং সমাবেশ আয়োজন, মু্ক্তিযুদ্ধের সপক্ষে পুরো ৯ মাসব্যাপী নানা কর্মসূচী প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মুল স্রোতে ভূমিকা রাখা ভিন্ন বিষয়। সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় সংগঠক দাবিদার অনেকেরই সেই সময় মুল স্রোতে জড়িত থাকার কোন প্রমাণ যেমন নেই তেমনি একটি পাউন্ডও দান করেছেন এমন রেকর্ডও নেই।

উল্লেখ্য ২০১১ সালের চ্যানেল আইয়ের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সেই সময়কার বেঁচে থাকা প্রায় সকল সংগঠক এবং মরণোত্তরও অনেককে মূল্যায়ন করা হয়েছে। তখন আজকের সংগঠক দাবিদার এ ব্যাপারে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেন নি এমনকি বেঁচে থাকা কোন কোন সংগঠক তাঁর ব্যাপারে নেতিবাচক উত্তরই প্রদান করেছেন।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রধান। তাই আমরা পূর্ণ বিশ্বাসী প্রবাসী মুক্তিযুদ্ধের স্বিকৃতি এ সরকারের সময়েই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তাই আমরা বিষয়টি বর্তমান সরকারের নজরে নিয়ে আসতে নানামাত্রিক উদ্যোগ-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি অব্যাহতভাবে।

২০১১ সালের চ্যানেল আইয়ের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের সম্মাননা, ২০১২ সালে সংগঠনের উদ্যোগে সম্মাননা, ২০১০ সালে লন্ডনে প্রেস কনফারেন্স, ২০১২ সালে সংগঠনের তৎকালীন প্রতিষ্ঠাতা ইবরাহিম আলীর নেতৃত্বে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়াও প্রবাসী সংগঠকদের স্বিকৃতি প্রদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে আবেদন প্রেরণের সরকারী উদ্যোগকে আমরা সাংগঠনিকভাবে স্বাগত জানিয়ে সংগঠনের তত্ত্বাবধানে আবেদনপত্র পূরণ ও প্রেরণে জোরালো ভূমিকা রাখি।

২০১৯ সালে সর্বশেষ আপডেট জানতে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক ড. তজাম্মেল টনি হক এর নেতৃত্বে বার্মিংহামস্থ হাইকমিশনে বৈঠকসহ আরো কয়েকটি স্মারলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়াও আপনারা নিশ্চয়ই জানেন লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মুনা তাসনিম এর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বার্মিংহামের কমিউনিটিতে প্রতিক্রিয়া তৈরি হলে আমরা রাষ্ট্রদূতে সাথে যোগাযোগ করি। তিনি তার ভুল স্বিকার করে আনুষ্ঠানিকভাবে তাৎক্ষণিক ভিডিও বার্তা প্রদান করে তার বক্তব্য সংশোধন করেন।

২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদকে অকার্যকর সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে স্বষ্টভাষায় বলতে চাই আমরা হীনস্বার্থ-ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে কাউকে ছোট কিংবা কাউকে বড় করে ইতিহাস বিকৃতির অংশ হতে চাই না। তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই আমরা আমাদের মূল দায়িত্ব তথা ২৮ মার্চ এবং প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে মূল স্রোতে ভূমিকা পালনকারীদের স্বিকৃতি আদায়ে অত্যন্ত সচেতন ও বলিষ্ঠভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা

অতিতের মত আমরা আপনাদের পূর্ণ সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। ইতিহাস বিকৃতির কবল থেকে বার্মিংহামের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় আমরা প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের স্বিকৃতি আদায়ের আমাদের মূল উদ্দেশ্য সাধন করতে সক্ষম হবো না।

পরিশেষে বার্মিংহামে বহির্বিশ্বের প্রথম পতাকা উত্তোলনের ইতিহাস এবং ২৮ মার্চের শপথ দিবস ও তৎকালীন সকল সংগঠকদের রাষ্ট্রীয় স্বিকৃতি প্রদানের দাবিটি আমরা আবারো আপনাদের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের সৃদৃষ্টি কামনায় পুনর্ব্যাক্ত করছি।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা

আমাদের এ লিখিত বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শোনার জন্য এবং আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

সংবাদটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on print
Print
Share on email
Email
Share on whatsapp
WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই। আপনি প্রথম মন্তব্যটি করুন। on মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বার্মিংহামবাসীর ঐতিহাসিক ভূমিকার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় এবং ইতিহাস বিকৃতি বিষয়ে’ ২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ এর সংবাদ সম্মেলন

আপনি কি ভাবছেন ? আপনার মতামত লিখুুন।

এই বিভগের আরো সংবাদ

সর্বশেষ