-
ভার্চুয়াল সভা না হওয়ায় ক্ষোভ
-
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতাকে সামনের সারিতে আসন দেয়া, না দেয়া নিয়ে বাদানুবাদ
আশরাফুল ওয়াহিদ দুলাল:
গত ২ অক্টোবর সোমবার যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের আয়োজনে লন্ডনের মেথড্রিস্ট সেন্ট্রাল হলে, যুক্তরাজ্যে সফররত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। সেখানে তিনি চিরাচরিত ভঙ্গিমায় বিএনপির সমালোচনা করেছেন, উপহাস করেছেন, দেখিয়েছেন প্রতিহিংসাও। বেগম জিয়ার ৮০ বছর হয়েছে মৃত্যুর সময় হয়েছে বলেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন যে, তার সরকার নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য সমস্ত সংস্কার করেছে। তিনি বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তারা স্বচ্ছ ব্যালট বক্স চালু করেছে এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করেছে।
প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবী জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন, পাশাপাশি প্রবাসীরা যাতে পাসপোর্ট দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারেন সেই ব্যবস্থা ও করা হয়েছে বলে ও জানিয়েছেন। হুন্ডি প্রতিরোধে অনলাইন ব্যাংকিং এর কথা উল্লেখ করে বলেন এখন বিদেশে বসেই আপনারা নিজেদের একাউন্টে লেনদেন করতে পারবেন।
এদিকে এদিন বার্মিংহামে বার্মিংহাম আওয়ামীলীগ ও মিডল্যান্ডস আওয়ামীলীগের উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখার কথা থাকলেও এই সভা আর হয় নি। স্থানীয় একটি হলে ভার্চুয়াল এই সভার সকল প্রস্তুতি ছিল। পরে লন্ডনের সভা প্রজেক্টরের মাধ্যমে তারা অবলোকন করেন।
বার্মিংহামের এসিসটেন্ট হাইকমিশনের সহযোগিতায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে লন্ডনের এই সমাবেশ সরাসরি এখানে প্রদর্শন করা হয়। বার্মিংহামের স্থানীয় একটি হলে এসময় প্রায় অর্ধ শত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পৃথকভাবে এই অঞ্চলের আওয়ামী নেতৃবৃন্দের সাথে ভার্চুয়াল সভা না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ পরিলক্ষিত হয়। এর দায় বা এই উপেক্ষার জন্য অনেকেই মর্মবেদনা প্রকাশ করেন এই প্রতিবেদকের কাছে।
প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শিত এই সমাবেশ মনিটর করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মিসবাউর রহমান মিসবা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন বার্মিংহামের এসিসটেন্ট হাইকমিশনার মো. আলীমুজ্জামান, কাউন্সেলর ও চ্যান্সেলর প্রধান স্বর্ণালী চন্দ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানের আয়োজক বার্মিংহাম আওয়ামীলীগ, মিডল্যান্ডস আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বার্মিংহাম আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজি কবির উদ্দিন, মিডল্যান্ডস আওয়ামীলীগের সভাপতি হিফজুর রহমান খান, বার্মিংহাম আওয়ামীলীগের সাধারণ সমপাদক মাহবুব আলম চৌধুরী মাখন, মিডল্যান্ডস আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বেলাল, বার্মিংহাম আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সাদেক মিয়া সামসুল, শাহ রোকন আহমদ, বুলন চৌধুরী, মোস্তফা কামাল বাবলু, বার্মিংহাম আওয়ামীলীগের এসিসটেন্ট সেক্রেটারী কামাল আহমেদ, নুরুল ইসলাম কিসলু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস শুকুর, প্রচার সম্পাদক নাসির আহমদ শ্যামল, ট্রেজারার হাজী ফখরুল ইসলাম, জুম্মা আহমদ লিটু, আশিক মিয়া, হাসিব উদ্দিন মতিন, শামিম আহমদ, তাজুল ইসলাম, সোহেল আলী, মিডল্যান্ডস আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি গাবরু মিয়া, সহ সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি স্বপ্না বেগম প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব আজির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ড. এম এ খালেক, এমএ রশিদ ভূঁইয়া, মিসেস নাজিয়া রাশিদ ভূঁইয়া।
প্রধানমন্ত্রীর বার্মিংহামের এই অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীর উপস্থিতির সংখ্যা ছিল নগণ্য। এজন্য আয়াজকরা একদিনের মধ্যে আয়োজনের কথা বললেও বার্মিংহাম আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দলের কারণে একাংশের অনুপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে বার্মিংহাম আওয়ামীলীগ সভাপতি দৃঢ়তার সাথে বলেছেন দলীয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠানে প্রকৃত আওয়ামীলীগাররা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে দৃষ্টিকটু ছিল যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতাকে সামনের সারিতে আসন দেয়া, না দেয়ার প্রসঙ্গটিও। যদিও তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন বলে জানিয়েছেন। তা না হলেও কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে তার আসনের বিষয়টি সামনের সারিতে বিবেচনা করাটা সাংগঠনিক ডেকোরাম। পরে অবশ্য বিষয়টি সুরাহা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ সিলেটের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। গৌরী চৌধুরীর নেতৃত্বে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত, গীতাপাঠ, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠ করা হয়।
এদিকে কোরআন তেলাওয়াতের সময় সম্ভবত টেকনিকেল কারণে তেলাওয়াতকারীকে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বার্মিংহামের প্রজেক্টরে দেখা না যাওয়ায় মিডল্যান্ডস আওয়ামীলীগের এক নেতা সভাস্থলে এবং পরে এই প্রতিবেদকের কাছে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
কোন মন্তব্য নেই। আপনি প্রথম মন্তব্যটি করুন। on প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান প্রজেক্টরের মাধ্যমে বার্মিংহামে প্রদর্শন