কথার কসরৎ
তন্দ্রাভরা চোখ- রঙের বেলুন
হাসির উড়না উড়ে বহু দূর
জগত সৃজিল কেবা
তার নামে এতো কী মধুর।
পসিনা মানুষ ঝরায়
ঝরোকায় উচ্ছ্বল হাসি
সর্বনাশ যতোই বাড়ুক
সহনেরে ভালোবাসি।
ছলনা যেমনই হোক গুন কি মোটেও কম?
কী অদ্ভুদ মানুষ এই
স্পষ্টকে ভাবে, লজ্জা-শরম।
হাওয়ার দখলে যেটুক থাকার থাকুক
লজ্জাকে না হয় মনের রঙে ঢাকুক
ভেতরটা যাদের ফাঁকা
কিংবা কিছু তন্দ্রামাখা ঘোর
তাদের জন্য রৌদ্র রেখেছি তুলে
সময়ে ফিরবে ভোর।
ছলনা নেই বলে এসব ছহিকথা
ভাঙ ও রসে নয় সিক্ত
জানার জন্য যেসব নিগূড়কথা
চোখের গভীর থেকে পান হোক
পান হোক আরো অতিরিক্ত।
এ উপচে যাবার নয় যে ঘাসফড়িং-এর হাল্কা পালক
ভারবাহী বস্তু সেও নিয়তির চালক।
মান্যবর কবিসদ মানবে কেন,
আমারও কি দ্বন্দ্ব কম অতলে
হাত বাড়িয়ে খানিকটা উজানও দেখি
দেখতে দেখতে পঞ্চাশ প্রায় ছুঁই
দ্বন্দ্ব আরো গভীরে জড়ায়
জীবন এমনই মেঘ ও রৌদ্রময়।
বুষ্টি ঝরাক, ঝরাক কাব্যগান
রবীঠাকুরের কঠিনেরে ভালোবাসি
অসুর রাজ্যে-আমি, হয়ে-রই অনাবাসি।
উৎসমুখ
ক্রোধের আগুনে পুড়ছে লোকালয়
টাওয়ারহ্যমলেটস-স্টেপনি গ্রিন
পপলার হয়ে ছড়াচ্ছে সর্বত্র
ফেনায়িত এই রোদ্রভাপ
পাখিদের ডানায় ঝুলে আছে
আগুন কী সর্বনাশা, কতো নির্দয়
বন্ধুর মুখ অচেনা লাগে
চেনা বৃত্তকে মনে হয় লক্ষ যোজন দূরের
গতকাল কিংবা আজ
মোটেই সমান নয়
কম্পিত হাতগুলো উত্তোলিত হলে
হৃদস্পন্দন থেমে যায়
ভয়ের কাঁটা নিয়ে আরো দূরে সরে যাই
দূরের গ্রামগুলো বন্ধুর উঠান বলে বিভ্রম হয়
তবু অপরিচিত পদচিহ্নগুলো আপনার হোক।
পলায়নপর মানুষ যতোই ভীত বা সন্ত্রস্ত হোক
যতোই দুঃস্বপ্নে কেঁপে উঠুক
তারাও সময়ে সর্বব্যাপি হয়
অসহায়ত্ব কখনো-সখনো
শক্তির উৎসমুখ খোলে দেয়।
গিঁট ও পাড় খুলতে খুলতে আমরা
আরো কিছু পথ হেঁটে যাবো
জং ধরা লোহার ভেতরেই লুকিয়ে আছে শানিত আলোর রশ্মি।
উদ্বেগহীন সমতল
বোধের দরজায় এক-এক করে তালা ঝুলছে
উপাসনাহীন মানুষ
আকারে নিজের মুখ দেখতে ভয় পায়
কারণগুলো যে পারো আজ উপড়ে দাও-
তাহলে আমাদের জীবন আরো দীর্ঘ হবে
উদ্বেগহীন সমতল এখন অপরিহার্য।
‘গাব্বারসিং’-এর ভয়ে এ তল্লাট তটস্ত
কারোর মুখে কোনো রা নেই
যাদের মুখগুলো এখনও কম্পনহীন
পদক্ষেপে রয়েছে স্বার্থের ইচ্ছা-অনিচ্ছা
এ তাদের নিরাপদ দূরত্ব
এ তাদের ভালো মানুষির উৎকৃষ্ট উপাদান
এ থেকে সবক নেয়া দুস্কর
এর চেয়ে উৎকট আর কী হতে পারে
শাটার আঁটা বোধের দরজায় আজ কষাঘাত করো
তবেই ভয়ের জানাজা হবে।
কোন মন্তব্য নেই। আপনি প্রথম মন্তব্যটি করুন। on আহমদ ময়েজ-এর তিনটি কবিতা